বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৩৯ অপরাহ্ন
আরিফুর রহমান স্বপন, কুমিল্লা: কুমিল্লার লাকসামে এবার এমআরপির তোয়াক্কা না করে উচ্চদামে ঔষধ বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে উপজেলা ঔষধ ব্যবসায়ী সমিতির সহ সভাপতি কোহিনুর ফার্মেসীর মালিক আবুল কালামের বিরুদ্ধে। সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য থাকলেও ওই অসাধু ব্যবসায়ী কোম্পানির নির্ধারিত মূল্য মুছে প্যাকেটের গায়ে নতুন করে মনগড়া মূল্য লিখে ঔষধ বিক্রি করায় তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠে।
জানা যায়, পৌর এলাকার রবিউল নামে এক ক্রেতা রোববার দুপুরে থানা রোডে আবুল কালামের কোহিনুর ফার্মেসী থেকে গ্ল্যাসকো স্মিথক্লিন কোম্পানির ২০ গ্রামের একটি নিওবেক্রীন ওয়েন্টমেন্ট ক্রয় করেন ১০০ টাকায়। যার কোম্পানি মূল্য ৫৪ টাকা। কোম্পানি মূল্য মুছে ওই অসাধু ব্যবসায়ী আবুল কালাম ঔষধের প্যাকেটে ১’শ টাকা মূল্যের একটি স্টিকার লাগিয়ে বিক্রি করেন। ক্রেতা রবিউল স্টিকার তুলে দেখেন ঔষধের প্যাকেটের গায়ে এমআরপি ৫৪ টাকা লেখা রয়েছে। এনিয়ে ক্রেতা ও সাধারণ মানুষের তোপের মুখে ভুল স্বীকার করে আবুল কালাম ক্ষমা প্রার্থনা করলেও সাধারণ মানুষ ওই ব্যবসায়ীকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে গ্রেফতারের দাবি জানান।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বেশ কিছুদিন ধরে লাকসামে ঔষধ ব্যবসায়ীদের নৈরাজ্যে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের (এমআরপি) অজুহাত দেখিয়ে সমিতির নামে একটি সিন্ডিকেট সাধারণ মানুষদের জিম্মি করে ফেলেছে। এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় ঔষধ ব্যবসায়ী সমিতি কিছু দিন আগে লাকসামে আধা বেলা ধর্মঘট ডেকে ঔষধ দোকান বন্ধ রেখেছে। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এদিকে ঔষধ ব্যবসায়ী সমিতির নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে লাকসাম বাইপাসে মানববন্ধন করেছে শত শত ভুক্তভোগী মানুষ। এছাড়াও পত্র পত্রিকাসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তোলপাড় সৃষ্টি হয় লাকসামের ঔষধ সিন্ডিকেট নিয়ে। এখনো সরব রয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকগুলো। এমআরপিতে ঔষধ বিক্রির পাশাপাশি ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ বিক্রি করে ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত ক্রেতাদের ঠকাচ্ছেন।
অপরদিকে, গত সপ্তাহে লাকসাম বাইপাসে ন্যাশনাল ফার্মেসীতে ভেজাল ঔষধ বিক্রির দায়ে ভ্রাম্যমান আদালত ওই দোকান মালিকের ৯০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। ঔষধ ব্যবসায়ী সমিতির হঠকারী সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়ে ঔষধ ক্রেতা মেজবাহ উদ্দিন মিশু বলেন, এমআরপির অজুহাতে সমিতির কর্তারা অতি মাত্রায় মুনাফার লোভে সাধারণ মানুষের ওপর জুলুম করছেন।
পাশাপাশি নিম্মমানের ও ভেজাল ঔষধ বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। আবার কিছু কিছু ঔষধ উচ্চ দামেও বিক্রি করছে। নরপাটি গ্রামের আলী হোসেন নামে এক দিন মুজুর বলেন, আগে অনেক কম দামে ঔষধ কিনেছি। দোকানদারকে বললে ওরা কম রাখতো। এখন আর কম রাখেনা। কম রাখার কথা বললে, ওরা বলে সমিতির সিদ্ধান্তের বাইরে কম রাখলে জরিমানা দিতে হবে।